নির্বাচনে নজিরবিহীন কারচুপির অভিযোগ তুলে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। পাশাপাশি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিও জানান তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে রোববার রাতে বেইলী রোডের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি জানান। ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে ভোট যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না, এটা আরও একবার প্রমাণিত হল। এ অবস্থায় দলীয় সরকার বাদ দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করতে হবে। এই নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। আওয়ামী লীগ এই দাবি না মানলে তাদের দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।’
ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, দেশের প্রায় সব আসন থেকেই একই রকম ভোট ডাকাতির খবর এসেছিল। এ পর্যন্ত আমাদের শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছে। এ অবস্থায় আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক। এই নির্বাচনের কথিত ফলাফল আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং সেই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। সবখানে জালিয়াতির মাধ্যমে ভোট হয়েছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যোগ দিয়েছিল এবং এই আন্দোলনও চলবে।
রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশের ২৯৯টি সংসদীয় আসনে একটানা ভোটগ্রহণ হয়। ভোটে বাধা দেয়া, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া এবং কারচুপির অভিযোগ তুলে বিএনপি-জামায়াত জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শতাধিক প্রার্থী দুপুরেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবর্তমানে তার দল বিএনপি এবার গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হওয়া নাগরিক ঐক্য, কৃষক-শ্রমিক-জনতা দল ও জেএসডির নেতারা ধানের শীষ প্রতীকে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ডা. জাফরুল্লাহ খান, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
সাংবাদিকরা ২০১৪ সালের একদলীয় নির্বাচনের সঙ্গে এই নির্বাচনের তুলনা করবেন কিনা- জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা সেই নির্বাচনের সঙ্গে এটার তুলনা করতে চাই না। আমাদের বিশ্বাস ছিল এই সরকার কোনো জালিয়াতি করবে না। তবে নির্বাচন কমিশন সেটা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। কাল আমাদের জরুরি বৈঠক আছে। সেখান থেকে আমরা আমাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাব।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ভোট কিছু হয়নি। এখানে যা হয়েছে তা হচ্ছে জালিয়াতি। এই ভোট আমরা মানি না। আমরা এই ভোট প্রত্যাখ্যান করলাম।’